সিলেট

জুড়ীতে মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার, বাদী নির্দোষ দাবি

প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৫ ২২:১৪

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার মামলায় ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম শেলুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে গ্রেফতারের পরপরই মামলার বাদী থানায় হাজির হয়ে চেয়ারম্যানের নির্দোষ দাবি করায় এবং গ্রেফতারের বিরোধিতা করায় ঘটনাটি নাটকীয় মোড় নেয়।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজমল হোসেন।

পুলিশ জানায়, গত জুলাই ও আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে চেয়ারম্যান শেলুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তবে গ্রেফতারের কিছুক্ষণ পরই জুড়ী থানায় ছুটে যান মামলার বাদী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী মো. তারেক মিয়া। তিনি পুলিশের কাছে দাবি করেন, ইউপি চেয়ারম্যান শেলু এই হামলায় জড়িত নন এবং তাকে ভুলবশত গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এজাহার থেকে চেয়ারম্যানের নাম প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালেও পুলিশ সে দাবিতে সাড়া দেয়নি। এ নিয়ে বাদী ও পুলিশের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়।

তারেক মিয়া অভিযোগ করেন, “হামলার মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। অথচ নির্দোষ মানুষদের ফাঁসানো হচ্ছে। পুলিশ এই মামলা দিয়ে বাণিজ্য করছে।”

চেয়ারম্যান শেলুর গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে ফুলতলা ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকা থেকে শতাধিক সমর্থক, আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী জুড়ী থানার সামনে জড়ো হন। এ সময় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ যখন তাকে ভ্যানে করে মৌলভীবাজারে পাঠানোর চেষ্টা করে, তখন উত্তেজিত জনতা গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৬ জুলাই এবং ৩ ও ৪ আগস্ট জুড়ী শহরে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেন। ৩ আগস্টের একটি মিছিলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করে বলে অভিযোগ উঠে। এরই প্রেক্ষিতে ২৬ আগস্ট তারেক মিয়া বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ৬৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও অনেককে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবেই চেয়ারম্যান শেলুকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজমল হোসেন বলেন, "আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ইউপি চেয়ারম্যানকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।"

সিলেট থেকে আরো পড়ুন


বিজ্ঞাপন