জাতীয়

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫ ২১:৩৪

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম। রোজার আগেই (ফেব্রুয়ারির মধ্যে) নির্বাচন হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

বুধবার (৯ জুলাই) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা জানান। ত্রয়োদশ নির্বাচনের প্রস্তুতির ব্যাপারে জানাতে তিনি সংবাদ সম্মেলনে আসেন।


প্রেস সচিব জানান, নির্বাচন সামনে রেখে ডিসেম্বরের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আট লাখ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

শফিকুল আলম জানান, আগামী মাসগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। 

প্রেস সচিব জানান, আজ উপদেষ্টা পরিষদে প্রায় দুই ঘণ্টা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে মিটিং হয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। 

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আট লাখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল সদস্যকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে হবে। 

তিনি জানান, নির্বাচনের সময় ১৮-৩২ বছর বয়সী ভোটারদের আলাদা বুথ রাখা যায় কি না সে বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

প্রেস সচিব বলেন, ভোটের আগে যেকোনো ধরনের ভায়োলেন্সকে যেন প্রতিহত করা যায় এবং ভোটের পরেও আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি যাতে ঠিক থাকে সেটা নিয়েও যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের আগে ডিসি, এসপি, ওসি, ইউএনওদের রদবদল করার কথা বলা হয়েছে। 

শফিকুল আলম আরও বলেন, নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ডের ১৭ হাজার নতুন সদস্য নেওয়া হচ্ছে। তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ যেন এ সময়ের মধ্যে শেষ হয়, সে বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন।

গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পরবর্তী নির্বাচন কবে সেই আলোচনা সামনে আসে। প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান একটি বিদেশি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, ১৮ মাস বা দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচনের ব্যাপারে কথা হয়েছে। 

এরপর থেকে বিএনপি ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানাতে থাকে। নির্বাচনি রোডম্যাপের ব্যাপারেও সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এর মধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা হয় যে, জুন মাস নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত নয়। 

এটা নিয়ে বিরোধের মধ্যেই গত জুনের শুরুতে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণায় জানানো হয়, বিএনপির পক্ষ থেকে আগামী রমজানের আগে ভোটগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকারেরও ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে। 

তবে আগামী রোজার আগেই যে ভোট হবে সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি। এর মধ্যেই জামায়াত-এনসিপিসহ কোনো কোনো দলের পক্ষ থেকে দেশে নির্বাচনী পরিবেশ নেই বলে দাবি তোলা হয়। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অনেকটা অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এর মধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা জানানো হলো। এতে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সুত্র; ঢাকা মেইল

জাতীয় থেকে আরো পড়ুন