সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় রোপা আমন ধানের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। বছরের এই সময়ে হাওর এলাকায় বন্যার পূর্বাভাস থাকে। ফলে এবার বন্যার শঙ্কা মাথায় নিয়েই কৃষকেরা আমন ধান রোপণ করছেন। সনাতন পদ্ধতির পাশাপাশি কৃষি ব্যয় সাশ্রয়ী আধুনিক রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের সাহায্যে কৃষকদের ধান রোপণ করতে দেখা গেছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি রোপা আমন ধান চাষাবাদের মৌসুমে ৪৯০ হেক্টর বীজতলা প্রস্তুত করা হয়েছে। আবাদের জমির পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার ৬১০ হেক্টর। ইতোমধ্যে ৪ হাজার ৯৯৭ হেক্টর জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই রোপণ শেষ হবে।
এবার আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৩৮ হাজার ১৭৬.৫ মেট্রিক টন ও চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৫ হাজার ৪৫১ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। উপজেলার ১ হাজার ৯৫০ জন কৃষককে আমন ধানের বীজ ও সার সরকারি প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
মিরপুর ইউনিয়নের লতিয়ারপাড়া কৃষক শফু মিয়া বলেন, কৃষি খরচ বেশি হওয়ায় ৫ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করছি। আবহাওয়া ভালো হলে ফলন ভালো হবে।
একই ইউনিয়নের আধুয়া গ্রামের আশরাফ মিয়া বলেন, সরকারি প্রনোদনার সার-বীজ পেয়েছি। বন্যা না থাকায় সময়মতো বীজতলা তৈরি করে ১০ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করেছি।
রানীগঞ্জ ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের কৃষক মুন্না মিয়া বলেন, ১৫ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করবো। এবারই প্রথম রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্র দিয়ে ধান রোপণ করেছি। এতে দ্রুত সময়ে অল্প খরচে চারা ধান রোপণ করা সম্ভব হয়েছে।
পাইলগাঁও ইউনিয়নের মশাজান গ্রামের টিপু সুলতান বলেন, কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী এলাকায় আমাদের জমি। প্রতিবছরই বন্যার আশঙ্কা থাকে। এবারও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবু ২৫ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ শুরু করেছি। চলতি সপ্তাহে রোপণ শেষ হবে।
বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, আগামী সপ্তাহে ধান রোপণ শেষ হবে এবং ভালো ফলন হবে বলে আশাবাদী।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, বোরো ফসলের পরেই আমন ধান দ্বিতীয় জনপ্রিয় ফসল। গতবছর ৯ হাজার ৪০৬ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদ করা হয়েছিল। এবার ৯ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদ হবে। চাষের জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া ভালো, বৃষ্টি হচ্ছে। এবার জনপ্রিয় ধান ব্রি-১০৩ ও নতুন জাত ১১০ প্রথমবার চাষাবাদ হচ্ছে। দেখবো মাঠে কেমন ফলন হয়। এ ছাড়াও ব্রি ৯৩ ও ব্রি ৯৫ জাতের ধান চাষাবাদের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। উপজেলা কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকদের পাশে রয়েছে।
সিলেট থেকে আরো পড়ুন