
গাজার মধ্যাঞ্চলে ত্রাণ বহনকারী একটি ট্রাক উল্টে কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত। এ ঘটনায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস।
বুধবার (০৬ আগস্ট) ক্রমবর্ধমান ভয়াবহ মানবিক সংকটের মধ্যে খাবার ও মৌলিক প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সন্ধানে বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি একটি ত্রাণের ট্রাক ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাতে ফিলিস্তিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ট্রাকটিকে ‘ঝুকিপূর্ণ রাস্তা’ দিয়ে যেতে বাধ্য করার পর এটি সেখানে ত্রানের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা ক্ষুদার্থ ফিলিস্তিনিদের ওপরেই উল্টে যায়।
এদিকে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গাজা সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এই ঘটনায় ২০ জন নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ত্রাণ ট্রাকের সীমিত অনুমোদন সত্ত্বেও, দখলদাররা ইচ্ছাকৃতভাবে এই ত্রাণের নিরাপদ চলাচল এবং বিতরণে বাধা সৃষ্টি করছে। তারা ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ভিড়ের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রাক চালকদের বাধ্য করে। এর ফলে প্রায়ই ত্রাণের জন্য মরিয়া ফিলিস্তিনিরা ট্রাকগুলোর ওপর হামলে পড়ে এবং জোরপূর্বক ত্রাণের বাক্সগুলো কেড়ে নেয়।’
প্রসঙ্গত, গাজা উপত্যকার মানবিক সংকট এখন চরম পর্যায়ে। জাতিসংঘের হিসাব বলছে, গাজার প্রতি তিনজনের মধ্যে দুজনই বর্তমানে দুর্ভিক্ষের মধ্যে আছেন। খাদ্যের অভাবে মানুষ অনাহারে মারা যাচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে গাজায় খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রতিদিনই ইসরায়েলের বর্বর সেনাদের হামলায় শিশুসহ অনাহারি ফিলিস্তিনিরা প্রাণ হারাচ্ছেন।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৭ মে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ শুরু করার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই তাদের খোলা চারটি ত্রাণ কেন্দ্রের কাছে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ত্রাণ সংগ্রগের চেষ্টার সময় ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ ৮৭ জন নিহত হয়েছেন। এতে ইসরায়েলি বাহিনীর এই ‘মৃত্যুর ফাঁদে’ এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১ হাজারের ৬৫৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১১ হাজারের ৮০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এছাড়াও এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বহু ফিলিস্তিনি।
অন্যদিকে বুধবার আরও ৫ ফিলিস্তিনি না খেতে পেরে মারা গেছেন। এতে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ক্ষুধাজনিত কারণে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ১৯৩ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ৯৬ জনই শিশু।